সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) অস্থায়ী ভবনের পাশ থেকে পরিত্যক্ত তিনটি গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি যায়নি বলে জানিয়েছেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, গাড়িগুলো বিকল ও ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় পরিচ্ছন্নতা শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এগুলো অন্যত্র সরিয়ে রাখার কথা ছিল। কিন্তু তারা তা না করে ডাম্পিং স্টেশনে ফেলে আসেন।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১১টায় নগর ভবনে আয়োজিত জরুরী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। বিগত কয়েকদিন থেকে সিলেটের স্থানীয়, জাতীয়, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন গণমাধ্যমে সিলেট সিটি করপোরেশনের তিনটি গাড়ি উধাও হওয়ার খবর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে দাবি করে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
তিনি আরো জানান, ‘নতুন কেনা গাড়ি ও যন্ত্রপাতি রাখার জন্য কার্যালয়ের সামনের জায়গা খালি করতে গিয়ে পরিচ্ছন্নতা শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তিনটি গাড়ির অংশবিশেষ ডাম্পিং স্টেশনে রেখে এসেছেন।’
গায়েব হওয়া গাড়িগুলোর কিছু দৃশ্যমান অংশবিশেষ ছাড়া আর কোন অস্থিত্ব নেই উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এ গাড়িগুলো দীর্ঘ দিন থেকে বিকল ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আবর্জনাস্তুপকে বড় করছিল। পরিবহন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গাড়িগুলোর অংশবিশেষ নির্ধারিত স্থানে তাদের দায়িত্বে না রাখায় পরিচ্ছন্নতা শাখার লোকজন আবর্জনা মনে করে ডাম্পিং স্টেশনে ফেলে আসেন। যা পরবর্তিতে ডাম্পিং স্টেশনে রক্ষিত রাখা হয়।
জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের (পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগার) দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে রাখা ৩টি অব্যবহৃত গাড়ি গত ২৬ সেপ্টম্বর গায়েব হয়ে যায়। এ ঘটনার ২৭ দিন পর গত ২৪ অক্টোবর কোতোয়ালি থানার নিখোঁজ ডায়রি (নং-১৯৪৯) করেন করপোরেশনের পরিবহন শাখার উপ সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) জাবেরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নগরীর ফুটপাত অবৈধ দখলদারমুক্ত রাখতে দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। একই সাথে নগরীর রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, ড্রেনেজ সমস্যার সমাধানসহ নগরবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা দিতে কাজ করছেন। মাঝে মধ্যে এসব কাজ করতে গিয়ে বিভিন্নভাবে নানামুখী সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে তাকে। যা সাংবাদিকসহ নগরবাসী অবগত আছেন। বিগত সময়ে রাস্তা সম্প্রসারণ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ জনগণের নির্বিঘেœ চলাচল নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে নগরীর ফুটপাত অবৈধ দখলদার মুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। এসব কাজ করতে গিয়ে প্রভাবশালীসহ কিছু ব্যক্তির গাত্রদাহ হওয়ার কারণে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দীর্ঘদিনের অকেজো তিনটি গাড়ির অংশবিশেষ নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
মেয়র বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার জন্য কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতে কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী এনামুল হাবীব, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজ, কাউন্সিলর এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জল, আব্দুর রকিব তুহিন, সোহেল আহমদ রিপন, আব্দুল মুহিত জাবেদ, সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, তৌফিকুল হাদী, শান্তনু দত্ত, আবজাদ হোসেন আমজাদ, মহিলা কাউন্সিলর সালেহা কবীর শেপী, রোকশানা বেগম শাহনাজ প্রমুখ।